নিজস্ব প্রতিবেদক
আমানতের সুদের হার বাড়ার পরও ব্যাংক খাতে আমানতের প্রবৃদ্ধির ধীর গতির বিষয়ে উদ্বেগ সম্প্রতি অনুষ্ঠিত মুদ্রানীতি বিষয়ক কমিটির বৈঠকে এ উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। কমিটির স্বতন্ত্র সদস্য এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, রাজনৈতিকভাবে আমানতারীদের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়রানির বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অবস্থান নিতে হবে। আমানতকারীদের আস্থার বৃহত্তর সুরক্ষার প্রয়োজনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার সুপারিশ করেছেন তারা। বাংলাদেশ ব্যাংকের এখন উচিত আন্তর্জাতিক রীতিনীতির ভালো উদাহরণ পর্যালোচনা করা এবং তা বাস্তবায়নে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া।
গত বৃহস্পতিবার রাতের তারিখ উল্লেখ করে দেওয়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, গত গত বছরের মে মাসের তুলনায় চলতি বছরের মে মাসে ব্যাংক খাতে আমানতের প্রবৃদ্ধি বেড়েছে ৭ দশমকি ৭৩ শতাংশ। ২০২৩ সালের মে মাসের তুলনায় গত বছরের একই মাসে আমানতের প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৮ দশমকি ৭৪ শতাংশ। ২০২২ সালের জুনের তুলনায় ২০২৩ সালের জুনে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৮ দশমিক ৪০ শতাংশ। ২০২৩ সালের জুনের তুলনায় ২০২৪ সালের জুনে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৯ দশমিক ২৫ শতাংশ।
প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে আগের তুলনায় চলতি বছরের আমানতের প্রবৃদ্ধি সবচেয়ে কম। বর্তমানে আমানতের সুদের হার যে কোন সময়ের তুলনায় বেশি। বর্তমানে ব্যাংকগুলো আমানতের বিপরীতে ৯ থেকে ১৩ শতাংশ মুনাফা দিচ্ছে। আগে এ হার ৯ শতাংশের নীচে ছিল। আমানতের সুদের হার বাড়ার পরও এর প্রবৃদ্ধি কমায় কমিটি উদ্বিগ্ন।
এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি সূত্র জানায়, এ সরকারের সময়ে আওয়ামী লীগ সরকারের ব্যাংক খাতে সংঘঠিত লুটপাটের তথ্য প্রকাশ হয়েছে। এছাড়া দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আওয়ামী লীগের দলীয় লোকজন আমানত তুলে নিচ্ছে।। আগের ব্যবসা বাণিজ্যের নিয়ন্ত্রণ ছিল তাদের দলীয় লোকদের হাতে। এখন তারা নেই বলে ওইসব ব্যবসায় চলছে স্থবিরতা। এচাড়া সংকোচনমুখী মুদ্রানীতির কারণে ব্যবসা গতি কম। এসব কারণে ব্যাংক খাতের আমানতের প্রবৃদ্ধি কম।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক মনে করে, আমানতের প্রবৃদ্ধির হার আগামীতে আরও বাড়বে। কারণ ব্যাংক খাতের সংস্কারের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নানামুখী পদক্ষেপের ফলে গ্রাহকদের আস্থা বাড়তে শুরু করেছে। এর প্রভাব আসতে কিছুটা সময় লাগবে। আগে অনেক টাকা দিতে পারতো না। এখন হাতে গোনা কয়েকটি ব্যাংক ছাড়া বাকি সব ব্যাংকই আমানতকারীদের চাহিদা অনুযায়ী টাকা দিতে পারছে।
