নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশে ১৯৯০ সালের পর থেকে তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। ১৯৯০ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত নির্বাচনগুলো গ্রহণযোগ্য হয়েছে। ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে ২০১১ সালে তত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করার উদ্যোগ নেয়। ২০১১ সালে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক তত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে অবৈধ হিসাবে আখ্যা দিয়ে তা বাতিল করে দেন। েএর প্রতিবাদে শুরু হয় আন্দোলন। এতে অনেক প্রাণহানি ঘটে। এরপর থেকে তিনি নানামুখী অপরাধ করেছেন। তিনি প্রধান বিচারপতি হয়েও আওয়ামী লীগের কর্মীর মতো আচরন করেছেন। সেই খায়রুল হককে বৃহস্পতিবার গ্রেফতার করা হয়েছে।
তাকে আদালতে হাজির করা হলে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে যাত্রাবাড়ী থানার কিশোর আব্দুল কাইয়ূম আহাদ হত্যা মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হককে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার রাতে শুনানি শেষে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. ছানাউল্যাহর আদালত এই আদেশ দেন।
এর আগে সন্ধ্যা ৭টা ৪৫ মিনিটের দিকে তাকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও যাত্রাবাড়ী থানার পুলিশ পরিদর্শক খালেদ হাসান। এরপর ৮ টা ১৫ মিনিটের দিকে পুলিশের কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনির মধ্যদিয়ে তাকে এজলাসে ওঠানো হয়।
এ বি এম খায়রুল হক প্রধান বিচারপতি থাকাকালে ২০১১ সালের ১ মে থেকে বিভিন্ন সময়ে অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ করে প্রতারণার উদ্দেশে জাল-জালিয়াতি করে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধ করেছেন। এ সংক্রান্ত নারায়ণগঞ্জ জেলাসহ বিভিন্ন থানায় তার বিরুদ্ধে মামলা আছে। আসামি একজন প্রভাবশালী বাক্তি। তাকে জামিনে মুক্তি দিলে প্রভাব বিস্তার করে মামলার তদন্তকাজে ব্যাঘাত ঘটানোর সম্ভাবনা আছে; ফলে তাকে বিচারের আগ পর্যন্ত জেলহাজতে আটক রাখা আবশ্যক।
এদিন আদালত চলাকালে পুরোটা সময় কাঠগড়া ধরে নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে ছিলেন সাবেক এই প্রধান বিচারপতি। শুনানিতে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা যখন তাকে উদ্দেশ্য করে আদালতে কথা বলছিলেন; তিনি মাথা নিচু করে ছিলেন। আদালতে তিনি কোনো কথা বলেননি। আদালত চলাকালীন ৮টা ১৫ মিনিট থেকে ৮টা ৩৬ মিনিটি পর্যন্ত নিশ্চুপ হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তার চোখ-মুখে ক্লান্তির ছাপ বোঝা যায়।
এর আগে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডির বাসা থেকে সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হককে গ্রেপ্তার করেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
বিচারপতি খায়রুল হক ২০১০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ২০১১ সালের ১৭ মে পর্যন্ত বাংলাদেশের ১৯তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। অবসরের পর তিনি আইন কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন এবং শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গত বছরের ১৩ আগস্ট সেই পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
