নিজস্ব প্রতিবেদক
বৃষ্টির দিনে পাহাড় ভ্রমণের জমাই আলাদা। বৃষ্টির মধ্যে ভিজতে ভিজতে পাহাড় ঘুরা সে যেন অন্য রকম এক অনুভূতি। গরমের তাপ নেই, অতিরিক্ত পানির পিপাসা লাগবে না। শরীরের ঘাম ঝড়ে দুর্বলতা লাগবে না। তবে বৃষ্টিতে পাহাড়ের মাটি বেশ পিচ্ছিল থাকে। খুব সতর্কতার সঙ্গে হাটতে হবে।
ভ্রমণের সময় সবাই পরিচিত স্থানগুলোকে বেছে নেয়। এতে ওইসব স্থানে বেশি ভিড় জমে। ফলে প্রকৃতিকে ভালভাবে এনজয় করা যায় না। এ জন্য আপনি বেছে নিতে পারেন এমন একটি স্থান যেখানে পর্যটকরা কম যায়।
এমন একটি স্থান হতে পারে খাগড়াছড়ির পাশেই। সারাদিনের জন্য এখানে ভ্রমণ করতে হলে আপনি সকালেই বেরিয়ে পড়ুন হোটেল থেকে। সরাসরি চলে যান পানছড়ি রোড়ের মাথায়। সেখান থেকে অটোতে চড়ে নামবেন আর্য্য বনবিহারের সামনে। সেখান থেকেই হেটেই যেতে পারে আর্য্য বনবিহারে। এটি ঘুরে দেখতে আপানার কমপক্ষে এক ঘন্টার বেশি সময় লাগবে। এটি দেখে বেরিয়ে আসুন যেখান দিয়ে গিয়েছিলেন সেখানে। কিছু দোকান পাবেন এখানে কিছু খেয়ে নিতে পারেন। সঙ্গে পানি ও কিছু খাবার নিয়ে নেন।
এবার এগুতে থাকেন দীঘিনালা রোডে কৃষি গবেষনা ইনস্টিটিউটের দিকে। লম্বা পথ। যাওয়ার সময় পাহাড়ের উচু নীচু এলাকা পেরুতে হবে। পাহাড়ের ওপর ওঠলে দেখতে পাবেন মেঘের ভেলা। মনে একটি উচু হলেই ছুয়ে দেয়া যেত। যাওয়ার সময় রাস্তার দুই পাশে দেকতে পাবেন আম, আনারস, ড্রাগন ফলের বাগান। দেখবেন পাহাড়ীরা এসব বাগানে কাজ করছে। তাদের সাথে কথা বলে কিনে ফলও খেতে পারেন। বাগান থেকে ফল তুলে খাওয়ার মজাই আলাদা। আপনি ২০ থেকে ৩০ টাকা কেজি আম পাবেন। ড্রাগন পাবেন ৫০ টাকা কেজি। আপনি আরও সামনে এগুতে থাকেন। পাহাড়ের এতো উচুতে ওঠে যাবেন যেন আপনি টেরই পাবেন না। উচু পাহাড় থেকে খাগড়াছড়ি শহরকে পুরোটা দেখতে পাবেন। মাঝে মধ্যে আপনি জংশন রোড পাবেন। আপনি হাটতে থাকবেন সোজা। মাঝে মধ্যে আকাবাক রাস্তা পাবেন। চারপাশের দৃশ্য দেশে প্রকৃতির মাঝে হারিয়ে যাবেন আপনি।
মাঝে মধ্যে ছোট দোকান পাবেন, সেগুলোতেই হালকা খেয়ে নিতে পারেন। দুপুর বিকেল গড়িয়ে সন্ধার দিকে দেখবেন চলে আসছেন কৃষি গবেষনার কাছে। দেখবেন কাজুবাদানের চাষ, কফির চাষ, নানা ফলের বাগান।
আপনি ইচ্ছে করলে আপনি পাহাড়ি পথ বেয়ে নীচে নেমে কৃষি গবেষনায় যেতে পারেন। আবার পাহাড়ের ওপর দিয়ে মূল বাস্তা দিয়েও যেতে পারে। কৃষি গবেষনার ভেতরে ওই দিন সময় পেলে ঘুরে দেখতে পারেন। আর ওই দিন না পারলে পরের দিন যেতে পারেন। এটি ঘুরে দেখতেও ভাল লাগবে।
কিভাবে যাবেন: ঢাকা থেকে টেনে যেতে পারেন ফেনী বা চট্টগ্রাম। ফেনীর মহিপাল থেকে খাগড়াছড়ির বাস ছেড়ে যায় সকাল ছয়টা থেকে। লোকাল সার্ভিস ও শান্তি পরিবহণের সরাসরি সার্ভিসও আছে। চট্টগ্রাম রেল স্ট্রেশন থেকে যেতে হবে অক্সিজেন মোড়। সেখান থেকে খাগড়াছড়ির লোকাল ও শান্তি পরিবহণের বাস আছে।
কোথায় থাকবেন: খাগড়াছড়ি শহরে থাকার অনেক হোটেল আছে। আপনার বাজেটের মধ্যে যে কোন একটি হোটেল বেছে নিতে পারেন।
কোথায় খাবেন : শহরের পানখাইয়া পাড়ায় অনেক বাল রেস্টুরেন্ট আছে। সেগুলোতে খেতে পারেন। এখানে পাহাড়ী ঐতিহ্যবাহী খাবারও পাওয়া যায়।
আপনি কয় দিন থাকবেন তার ওপর পরিকল্পনা করুন। শহরের আশেপাশে আরও অনেক ভ্রমণের মতো স্থান আছে। সেগুলোও ঘুরে দেখতে পারেন।
