নিজস্ব প্রতিবেদক
ইংরেজ নীলকর রবার্ট মোরেলের নামানুসারে প্রতিষ্ঠিত হয় বাগেরহাট জেলার মোরেলগঞ্জ উপজেলার রবার্ট মোরেলের কুঠিবাড়ি। ১৪২ বছরের এই ঐতিহ্য ২০২৪ সালে গেজেটভুক্ত স্থাপনার তালিকায় ঠাঁই পেয়েছে। কিন্তু দীর্ঘ দিনের অযত্ন, অবহেলা আর সংস্কারের অভাবে দিনে দিনে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এই কুঠি বাড়ি। তবে এবার বাড়িটির অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে স্বল্প পরিসরে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর।
ইংরেজ শাসনামলের সাক্ষী, অত্যাচারী মোরেলের শেষ স্মৃতি এই কুঠিবাড়ি। এর অনেক জমি এখন বেদখল। ১৮৪৯ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির প্রতিনিধি রবার্ট মোরেলের মৃত্যু হলে স্ত্রী মিসেস মোরেল তার দুই ছেলে রবার্ট মোরেল ও হেনরি মোরেলকে নিয়ে বসতি স্থাপন করেন পানগুছি নদীর পশ্চিম পাড়ে।
সুন্দরবনের জমি বন্দোবস্ত নিয়ে শুরু করেন নীলচাষ। বাগেরহাট তখন মহকুমা হয়নি। খুলনা জেলাও ছিল যশোর জেলার অন্তর্গত। আর এর বড় অংশ জুড়ে ছিল সুন্দরবন। মিসেস মোরেল বরিশাল থেকে শ্রমিক সংগ্রহ করে বন আবাদ করে গড়ে তোলেন বিশাল আবাসস্থল ও কুঠিবাড়ি।
বাগেরহাট জেলার দক্ষিনাঞ্চল মোরেলগঞ্জ পৌরসভায় অবস্থিত মোরেলদের এই কুঠিবাড়ি। ভবনের পুরনো আমলের সেই দরজা, জানালা, গ্রিল, সিন্দুক, সিঁড়িসহ বহু মূল্যবান মালামাল ধীরে ধীরে বেহাত হয়ে গেছে। স্মৃতিস্তম্ভ থেকেও চুরি হয়ে গেছে অনেক মালামাল।
ইতোমধ্যে ঐতিহাসিক এই স্থাপনার ৬০ শতাংশই ধ্বংস হয়ে গেছে। এটি টিকিয়ে রাখতে কয়েক কোটি টাকা প্রয়োজন। এই অর্থবছরে ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ আসছে। বাজেট স্বল্পতার কারণে অধিদপ্তর কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি।
মোরেলগঞ্জ গঞ্জে গেলে আশেপাশে আরও অনেক কিছু রয়েছে সেগুলোও দেখে আসতে পারেন। উপজেলা সদরের ১ কি.মি দূরে অবস্থিত মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি ফলক। এছাড়া বাগের হাটের নানা স্থাপনাতো আছেই।
যেভাবে যাবেন : ঢাকা থেকে যে কোন বাসে বাগেরহাট যাওয়া যায়। সেখান থেকে মোরেলগঞ্জ উপজেলা সদরে যাওয়ার বাস বা অটোরিক্স আছে। আবার ঢাকা থেকে সরাসরি মোরেলগঞ্জ যাওয়ার বাসও আছে। এটি উপজেলা সদর থেকে ২ কি.মি. দুরে উপজেলা ভুমি অফিসের পাশে অবস্থিত। উপজেলা সদর থেকে পায়ে হেটে যাওয়া যায়।
