নিজস্ব প্রতিবেদক
জাতিসংঘের উদ্যোগে বিশ্বব্যাপী প্লাস্টিক দূষণ রোধে একটি বাধ্যতামূলক চুক্তি করার লক্ষ্যে মঙ্গলবার জেনেভায় ১০ দিনের আলোচনা শুরু হয়েছে।
গত বছরের ডিসেম্বরে দক্ষিণ কোরিয়ায় আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার পর এবার দেশগুলো নতুন করে সমঝোতার আশা করছে। তবে প্লাস্টিক উৎপাদন সীমা ও ক্ষতিকর রাসায়নিক নিষিদ্ধকরণ ইস্যুতে এখনো তীব্র মতভেদ রয়েছে। খবর এএফপ‘র।
খবরে বলা হয়, তিন বছর ধরে আলোচনার পর ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে দক্ষিণ কোরিয়ার বুসানে তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর বাধায় এ নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছানো যায়নি। বুসানে আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার পর থেকে দেশগুলো পর্দার আড়ালে আলোচনা অব্যাহত রেখেছিল এবং এখন জাতিসংঘ আয়োজিত নতুন উদ্যোগে জেনেভায় আলোচনায় বসেছে।
আলোচনার নেতৃত্বে থাকা গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা জানান, এবারও সহজ সমাধান আশা করা যাচ্ছে না, তবে তারা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন, একটি চুক্তি এখনো নাগালের মধ্যেই রয়েছে।
এ আলোচনার আয়োজন করেছে জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচি (ইউএনইপি)। ইউএনইপির নির্বাহী পরিচালক ইঙ্গার অ্যান্ডারসেন বলেন, ‘বুসানের পর থেকে ব্যাপক কূটনৈতিক তৎপরতা চালানো হয়েছে। বিভিন্ন অঞ্চল ও স্বার্থসংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীর মধ্যে বিস্তৃত সংলাপ আলোচনায় গতি এনেছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমি যেসব দেশের সঙ্গে কথা বলেছি, তাদের অধিকাংশই বলেছে, ‘আমরা জেনেভায় যাচ্ছি চুক্তি করতে’। চুক্তি সহজ হবে? না। সরল পথে হবে? না। তবে চুক্তির সুযোগ আছে? অবশ্যই আছে।’
প্লাস্টিক দূষণ এতটাই ব্যাপক হয়ে পড়েছে, এর অতিক্ষুদ্র কণা মাইক্রোপ্লাস্টিক বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বতচূড়া থেকে শুরু করে গভীরতম সাগরের তলদেশ পর্যন্ত, এমনকি মানবদেহের প্রায় প্রতিটি অংশেই পাওয়া গেছে।
২০২২ সালে দেশগুলো প্রতিজ্ঞা করে, ২০২৪ সালের মধ্যে এই সংকট নিরসনের পথ খুঁজে বের করবে। কিন্তু প্লাস্টিক দূষণ, বিশেষ করে সাগরে এ দূষণ ঠেকাতে একটি বাধ্যতামূলক আন্তর্জাতিক চুক্তির চূড়ান্ত আলোচনা বুসানে ব্যর্থ হয়।
কিছু দেশ চেয়েছিল একটি উচ্চাকাঙ্ক্ষী চুক্তি, যাতে প্লাস্টিক উৎপাদনের সীমা নির্ধারণ এবং ক্ষতিকর রাসায়নিক পর্যায়ক্রমে বন্ধের বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকে।
অন্যদিকে বেশিরভাগ তেল উৎপাদনকারী দেশ এই উৎপাদন সীমা মানতে অস্বীকৃতি জানায় এবং শুধু বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ওপর জোর দিতে চায়।
আলোচনায় সভাপতিত্ব করছেন ইকুয়েডরের কূটনীতিক লুইস ভায়াস ভালদিভিয়েসো। তিনি বলেন, ‘এখন একটি কার্যকর, ন্যায্য ও উচ্চাভিলাষী চুক্তি হাতের নাগালে রয়েছে।’
